আসলে কেমন দেশ ক্রোয়েশিয়া ?

একবারে শেষ প্রান্তে চলে এসছে রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ। এরি মধ্যে ৩২ দলের মধ্যে থেকে ফাইনালে স্থান করে নিয়েছে ২ টি দল,এক হচ্ছে ফ্যান্স অপরটি দলটি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। ২১তম বিশ্বকাপে রাশিয়ায় বিধ্বংসী রুপে ক্রোয়েশিয়া নামক একটি দেশ আগমন করবে এমন ভাবনাটি মনে হয় এই মহোযজ্ঞের আগে কেউ ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করেনি। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে দেখে কে বলবে এই দলটি তালিকার শেষে?

যেখানে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, আর্জেন্টিনা এবং পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা বিদায় নিয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডে। সেখানে সবাইকে তাক লাগিয়ে ফাইনা নিশ্চিত করেছে দলটি। ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ি।
ক্রোয়েশিয়া জন্মঃ রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকেই কোন না কোন ফর্মে এই ক্রোয়েশিয়ার অস্তিত্ব ছিল। তবে বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া নামের যে রাষ্ট্র, ১৯৯১ সালের আগে তার কোন অস্তিত্ব ছিল না। সে বছরের জুন মাসে আধুনিক এই রাষ্ট্রটি ইয়ুগোস্লাভিয়া থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদস্য ক্রোয়েশিয়া এবং দেশটির লোকসংখ্যা ৪০ লাখের সামান্য বেশি। সারা বিশ্বের সবকটি দেশের জনসংখ্যা হিসেবে করলে ক্রোয়েশিয়ার অবস্থান ওই তালিকার ১৩০ নম্বরে।

ডালমাশিয়ান কুকুরঃ বিরল ডালমাশিয়ান জাতের কুকুরের জন্ম ক্রোয়েশিয়ায়। বলা হয়, ডালমাশিয়া অঞ্চলে এর উৎপত্তি। সাদা চামড়ার শরীরে কালো কালো স্পটের জন্যে বিখ্যাত এই প্রজাতির কুকুর। ষোড়শ শতাব্দীতে আঁকা পেইন্টিংসে এবং গির্জার ক্রনিকেলেও এই কুকুরটিকে দেখতে পাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের আর কোথাও এই কুকুরটির মতো অন্য কোন কুকুর দেখতে পাওয়া যায় না। এবং ডালমাশিয়াতে এর উৎপত্তি বলেই এর নামকরণ করা হয়েছে ডালমাশিয়ান।

গেম অফ থ্রোন্সের শহর ক্রোয়েশিয়ায়: গেম অফ থ্রোন্স এমন এক কল্পরাজ্য যাতে আছে বহু ড্রাগন এবং হোয়াইট ওয়াকার। কিন্তু এটা একেবারেই স্বপ্নের কোন জগত নয়। ‘ওয়েস্টেরস’ নামের কাল্পনিক ওই দেশের রাজধানী ‘কিংস ল্যান্ডিং’ এর অস্তিত্ব যেন আছে ক্রোয়েশিয়ারই একটি শহরে, আর সেই শহরটির নাম ডুব্রোভনিক।

এই শহরেই গেম অফ থ্রোন্স সিনেমার প্রায় পুরোটা অংশ চিত্রায়ন করা হয়েছে। প্রাচীণকালের ঐতিহ্যবাহী গথিক ও রেনেসাঁ গির্জার জন্যে বিখ্যাত এই শহর। আছে অপূর্ব নৈসর্গিক সব দৃশ্য। গেম অফ থ্রোন্সের জনপ্রিয়তার কারণে এই শহরে পর্যটকেরও সংখ্যাও অনেকে বেড়ে গেছে।

সপ্তদশ শতাব্দীতে যে ‘থার্টি ইয়ার্স ওয়ার হয়েছিল’ সেসময় ফরাসী সেনাবাহিনীতে ক্রোয়েশিয়ানরা তাদের গলায় এই কাপড়টি পেঁচিয়ে রাখতো। সেখান থেকেই এই ক্রাভাত টাই এর জন্ম। দেশটিতে প্রতিবছর ১৮ই অক্টোবর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক ক্রাভাত দিবস হিসেবে। নিজেদের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি তুলে ধরতে ক্রোয়েশিয়ার নাগরিকরা বিশেষ এই দিনটিতে গলায় নেকটাই পরে থাকেন।